প্রতিবাদের শঙ্খ ধ্বনি
=======================
১) তিন রাউন্ড গুলি খেলে তেইশজন মরে যায়
লোকে এত বজ্জাত হয়েছে !
২) চরিত্রই নেই যার তার আবার ধর্ষণ কোথায়?
৩) আমার কাছে না এলে,
আমার কথা না শুনলে আজ
আমি তো বুঝি না
তুমি কীভাবে বা হবে জনগণ!
৪)মেজাজ দেখাও যদি, কথার উপরে বলো কথা
তা হলে মুশকিল বড়ো।
মারতে তো চাই না সহজে
—– কিন্তু এরকম করলে নিতান্তই নিরুপায় হয়ে
খুলে নিতে হবে চামড়া,
তোমারই ভালোর জন্য বাপু!
৫) ইয়ে তো পহেলা ঝাঁকিয়ে হ্যায়
ইয়ে তো পহেলা ঝাঁকিয়ে হ্যায়
হাওয়ায় হাওয়ায় ঝাঁকি
অক্ষরে অক্ষরে জাগুয়ার
স্বপ্নের ভারতবর্ষ স্বপ্নের ভিতরে অন্য কার!
আপনারা জানেন এরকম আরও অনেক উদ্ধৃতি
তুলে আনা যায় কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতা থেকে।
সমাজে বা দেশে- বিদেশে ,পৃথিবীর যেখানেই কোনো অত্যাচার ঘটেছে তখনই শঙ্খ ঘোষ প্রতিবাদ করতে পিছপা হননি। কোনো দলীয় রাজনীতি তাঁকে প্রভাবিত করতে পারে নি।
শকুন, এসেছিস কী সন্ধানে
এই নে বুক মুখ, হাত নে পা নে
ভাবিস পাবি তবু আমার মানে।
এটাই শঙ্খ ঘোষ। এখানেই তিনি, হয়তোবা, একা।
বিচার দেবার আগে
জেনে নাও দেগে দাও
প্রশ্ন করো তুমি কোন দল
আত্মঘাতী ফাঁস থেকে বাসি শব খুলে এনে
কানে কানে প্রশ্ন করো তুমি কোন দল
রাতে ঘুমোবার আগে ভালোবাসবার আগে
প্রশ্ন করো কোন্ দল তুমি কোন্ দল
গুজরাতের গণহত্যার পর ত্রাণসংগ্রহের সময়, বন্যাবিধ্বস্ত বাংলাদেশের জন্য ত্রাণসংগ্রহের সময়ে
শিক্ষক-আন্দোলনের সময়ে — পথের মিছিলে সমাবেশে আমরা সব সময় প্রতিবাদী শঙ্খ ঘোষকে দেখেছি। নন্দীগ্রামের জমিরক্ষার আন্দোলনের পুরোভগে পেয়েছি। তাঁর সেই সময়ের কবিতা ‘ স-বিনয় নিবেদন ‘ পুরো পশ্চিমবঙ্গকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। আর এই চরিত্রের একেবারে এই সময়ের ২০১৮ তে লেখা আরেকটি কবিতা ‘ মুক্ত গণতন্ত্র ‘। দলীয় রাজনীতি ও কবি শঙ্খ ঘোষের অবস্থান বোঝাতে গেলে এই দুটি কবিতার উল্লেখ করতেই হয়।
স- বিনয় নিবেদন
—————————— —-
আমি তো আমার শপথ রেখেছি
অক্ষরে অক্ষরে
যারা প্রতিবাদী তাদের জীবন
দিয়েছি নরক করে।
দাপিয়ে বেড়াবে আমাদের দল
অন্যে কবে না কথা
বজ্রকঠিন রাজশাসনে
সেটাই স্বাভাবিকতা।
গুলির জন্য সমস্ত রাত
সমস্ত দিন খোলা—–
বজ্রকঠিন রাজ্যে এটাই
শান্তি ও শৃঙ্খলা।
যে মরে মরুক, অথবা জীবন
কেটে যাক শোক করে —-
আমি আজ জয়ী, সবার জীবন
দিয়েছি নরক করে।
মুক্ত গণতন্ত্র
———————-
সবাই শুধু মিথ্যে রটায়।
পথগুলি সব দেদার খোলা —
যার খুশি আয় বিরুদ্ধতায়।
যথার্থ এই বীরভূম —
উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে
পেয়েছি শেষ তীরভূমি।
দেখ্ খুলে তোর তিন নয়ন
রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে
দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।
সবাই আমায় কর্ তোয়াজ —
ছড়িয়ে যাবে দিগ্বিদিকে
মুক্ত গণতন্ত্র আজ।
নব্বইতম জন্মবর্ষে কবিকে আমাদের প্রণাম।